ইস্তেখারার দোয়া, ইস্তেখারার নামাজ ও দোয়া

ইস্তেখারার দোয়া, ইস্তেখারার নামাজ ও দোয়া : আসসালামু আলাইকুম সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুগণ আপনাদের সকলের প্রতি অনেক অনেক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের আজকের আলোচনা। পাঠক বন্ধুগণ আমরা আজকে আপনাদের মাঝে নিয়ে এসেছি ইস্তেখারার দোয়া সম্পর্কিত একটি পোষ্ট। আমাদের আজকের এই পোস্টে আমরা আপনাদের মাঝে ইস্তেখারার দোয়াটি তুলে ধরব। সেই সাথে দোয়াটি পরিপূর্ণভাবে আমল করার নিয়ম কানুন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে সকল ধরনের তথ্য আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। ইস্তেখারা মানুষের জীবনে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা মানুষকে দ্বিধাদ্বন্দ্ব দূর করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে থাকে। মুসলিম হিসেবে প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রয়োজনীয় একটি আমল। এজন্য আমরা আজকে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়ে এসেছি ইস্তেখারার দোয়া সম্পর্কিত এই পোস্টটি। আপনারা আমাদের আজকের এই পোস্ট থেকে ইস্তেখার দোয়াটি সংগ্রহ করে আমল করতে পারবেন।
ইস্তেখারা ইসলাম ধর্মাবলম্বী প্রতিটি মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল ও ইবাদত। ইস্তেখারা বলতে বোঝায় দুটি কল্যাণকর বিষয়ের মধ্যে কোনটি অধিক কল্যাণকর হবে এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ তায়ালার সাহায্যে দু’রকম নফল নামাজ ও ইস্তেখার দোয়ার মাধ্যমে দোয়া করার নামই হচ্ছে ইস্তেখারা। ইস্তেখারার মাধ্যমে একজন মানুষ অধিক কল্যাণকর বিষয় সম্পর্কে সহজে বুঝতে পারে। ইস্তেখারার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দুই রাকাত নামাজ ও বিশেষ দেয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাআলার কাছে কল্যাণকর বিচার প্রতি মন ধাবিত হওয়ার প্রার্থনা করা। ইস্তেখারা করার জন্য সঠিক নিয়মকানুন রয়েছে।
ইস্তেখারাকে পরিপূর্ণ করতে ইস্তেখারা একটি দোয়া রয়েছে। দুই রাকাত নামাজ ও এই বিশেষ দোয়াটির মাধ্যমে ইস্তেখারা করা হয়। ইস্তেখারা করার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা হয়। ইস্তেখার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাআলা তার বান্দাকে অধিক কল্যাণকর বিষয়টির প্রতি বান্দার মন কে ধাবিত করে দেন। তাই আমাদের জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই দুই রাকাত নামাজ পড়ে ও বিশেষ দেয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাআলার কাছে ইস্তেখারা করতে হবে।
ইস্তেখারার দোয়া
অনেকেই অনলাইনে ইস্তেখারার দোয়াটি সম্পর্কে জানতে অনুসন্ধান করে থাকে। আজকে আমরা আমাদের পোস্টে তাদের জন্য নিয়ে এসেছি ইস্তেখারার দোয়া সম্পর্কিত সকল তথ্য। আমরা এই পোস্টটিতে আপনাদের মাঝে ইস্তেখারার দোয়াটি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছি। আপনারা যারা বাংলা ভাষায় ইস্তেখারার দোয়াটি সংগ্রহ করতে চান তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে ইস্তেখারার দোয়াটি বাংলায় সংগ্রহ করতে পারবেন। এছাড়াও আমরা দোয়াটি আপনাদের সকলের উদ্দেশ্যে আরবি ভাষায় উপস্থাপন করেছি। আপনারা আমাদের আজকের এই পোস্ট থেকে ইস্তেখারার দোয়াটি সংগ্রহ করে আপনি দোয়াটির আমল করতে পারবেন এবং আপনার পরিবার পরিজন ও বন্ধুদের মাঝে আমল করার সুযোগ করে দিতে পারবেন। নিচে ইস্তেখারার দোয়াটি তুলে ধরা হলো:
ইস্তেখারা করার নিয়ম:
১) ওযু করতে হবে।
২) ২ রাকায়াত নফল নামায পড়তে হবে। (নামাজের নিয়ত ও নিয়ম ভিডিও শেষে আলোচনা করব, ইনশাআল্লাহ)
৩) নামাযের সালাম ফিরিয়ে আল্লাহ তায়ালার বড়ত্ব ও মর্যাদার কথা মনে জাগ্রত করে একান্ত বিনয় ও নম্রতা সহকারে আল্লাহর প্রশংসা ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর দরূদ পেশ করার পর ইস্তেখারার দুয়াটি পাঠ করতে হবে:
জাবির ইবনে ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত-তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে যেভাবে কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন, ঠিক সেভাবে প্রতিটি কাজে আমাদেরকে ইস্তিখারা (কল্যাণ প্রার্থনা) শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেনঃ যখন তোমাদের কেউ কোন কাজের ইচ্ছা করে তখন সে যেন ফরয ছাড়া দুই রাক’আত নামায আদায় করে নেয়,(নফল নামাজ) অতঃপর বলেঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلاَّمُ الْغُيُوبِ، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي ومعاشِى وَعَاقِبَةِ أَمْرِي فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي ومعاشِى وَعَاقِبَةِ أَمْرِي فَاصْرِفْهُ عَنّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ أَرْضِنِي بِهِ.
”আল্লাহুম্মা ইন্নী-আস্তাখিরুকা বি-ইলমিকা ওয়া আস্তাকদিরুকা বি-কুদরাতিকা ওয়াআসআলুকা মিনফাদলিকাল আযীম, ফা-ইন্নাকা তাকদিরু ওয়ালা আকদিরু, ওয়া তা’লামু ওয়ালা আ’লামু ওয়া আন্তা আল্লামুল গুয়ূব। আল্লাহুম্মা ইনকুন্তা তা’লামু আন্না “হাযাল আমরা” খাইরুল্লি ফীহ- দ্বীনী ওয়া মা’আশী ওয়া আক্বিবাতি আমরী, ফাকদুরহুলী ওয়া-্ইয়াসসিরহু লী, সুম্মা বা-রিকলী ফীহি, ওয়া ইন কুনতা তা’লামু আন্না হাযাল আমরা শাররুল্লী ফী দীনী ওয়া মা’আশী ওয়াআকীবাতি আমরি,ফাসরিফহু আন্নী ওয়াসরীফনী আনহু ওয়াকদির লিয়াল খাইরা হাইসু কানা সুম্মা আরদিনী বিহী।”
অর্থ “হে আল্লাহ! আমি তোমার জ্ঞানের সাহায্য চাইছি, তোমার শক্তির সাহায্য চাইছি এবং তোমার মহান অনুগ্রহ চাইছি। তুমিই শক্তি ও ক্ষমতার অধিকারী, আমার কোন ক্ষমতা নেই। তুমি অফুরন্ত জ্ঞানের অধিকারী, আমার কোন জ্ঞান নেই। তুমি অদৃশ্যবিষয়ে সম্পূর্ণরূপে জ্ঞাত। হে আল্লাহ! তুমি যদি এ কাজটি আমার জন্য, আমার দ্বীনের দৃষ্টিকোণ হতে, আমার জীবন যাপনের ব্যাপারে এবং আমার কাজের পরিণামের দিক হতে, ভাল মনে কর তবে তা আমার জন্য নির্দিষ্ট করে দাও এবং আমার জন্য সহজ করে দাও। পক্ষান্তরে তুমি যদি এ কাজটি আমার জন্য আমার দ্বীনের দৃষ্টিকোণ হতে, আমার জীবন যাপনের ব্যাপারে এবং আমার কাজকর্মের পরিণামের দিক হতে ক্ষতিকর মনে কর, তবে তুমি সে কাজটি আমার থেকে দূরে সরিয়ে দাও। এবং আমাকে তা থেকে বিরত রাখ। এবং যেখান থেকে হোক তুমি আমার জন্য কল্যাণ নির্ধারণ করে দাও”।
(তিরমিজি ৪৮০ ইবনু মাজাহ (১৩৮০,রিয়াদুস সলিহীন ৭২২)